বাংলা

ধ্বনি

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - বাংলা - বাংলা ২য় পত্র | NCTB BOOK

কোনো ভাষার বাক্ প্রবাহকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা কতগুলো মৌলিক ধ্বনি (Sound) পাই। বাংলা ভাষাতেও কতগুলো মৌলিক ধ্বনি আছে। বাংলা ভাষার মৌলিক ধ্বনিগুলোকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা হয় : ১. স্বরধ্বনি ও ২. ব্যঞ্জনধ্বনি।

১. স্বরধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি (Vowel sound) । যেমন – অ, আ, ই, উ ইত্যাদি।

২. ব্যঞ্জনধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonant sound) যেমন- ক, চ, ট, ত, প ইত্যাদি।

বর্ণ : ধ্বনি নির্দেশক চিহ্নকে বলা হয় বর্ণ (Letter) |

স্বরবর্ণ : স্বরধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় স্বরবর্ণ। যেমন- অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনবর্ণ : ব্যঞ্জনধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় ব্যঞ্জনবর্ণ। যেমন-ক ইত্যাদি। বর্ণমালা : যে কোনো ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সেই ভাষার বর্ণমালা (Alphabet) বলা হয়।

বিশেষ জ্ঞাতব্য : উচ্চারণের সুবিধার জন্য বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি 'অ' স্বরধ্বনিটি যোগ করে উচ্চারণ করা হয়ে থাকে। যেমন - ক্ + অ = ক, ইত্যাদি। স্বরধ্বনি সংযুক্ত না হলে অর্থাৎ উচ্চারিত ব্যঞ্জনের নিচে ‘হস্' বা 'হল' চিহ্ন (.) দিয়ে লিখিত হয়।

Content added By
ধ্বনির পরিবর্তন
প্রত্যয়
সন্ধি
ষত্ব বিধান
ক খ গ ঘ ঙ
চ ছ জ ঝ ঞ
ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম

ধ্বনির পরিবর্তন

প্রত্যয়

সন্ধি

ষ-ত্ব বিধান

নাসিকা-ব্যঞ্জন
আনুনাসিক-অঘোষ
ঘৃষ্ট-নাসিকা
নাসিকা-ব্যঞ্জন ও অল্পৃপ্রাণ
ব্যঞ্জন ও অল্পপ্রাণ
নাসিকা-ব্যঞ্জন ও মহাপ্রাণ
নাসিকা ও অল্পপ্রাণ
আনুনাসিক ও অঘোষ
নাসিকা-ব্যঞ্জন ও অল্পপ্রাণ
নাসিকা-ব্যঞ্জন ও মহাপ্রাণ
নাসিকা-ব্যঞ্জন ও অঘোষ
নাসিকা-ব্যঞ্জন ও উস্মু
তাড়নজাত
কম্পনজাত
নাসিক্য
উষ্ম
ধ্বনি বিপর্যয়
বর্ণ বিপর্যয়
অপিনিহিত
ব্যঞ্জন বিকৃতি
সৈয়দ শামসুল হক
জীবনানন্দ দাশ
সুকান্ত বট্টাচার্য
দিলওয়ার
বাতাসের পরিমাপের উপর
স্বরতন্ত্রীর-কম্পনের উপর
কন্ঠনালির উঠানামার উপর
জিভের উচ্চতার উপর
উষ্ম ধ্বনি
পরাশ্রয়ী ধ্বনি
স্পর্শ ধ্বনি
জিহ্বামূলক ধ্বনি
শিশ ধ্বনি
অঘোষ ধ্বনি
অল্প প্রাণ ধ্বনি
তাড়ানজাত ধ্বনি
ঘােষ
তাড়নজাত
শিস্
মহাপ্রাণ
অল্পপ্রাণ
ঘোষ
তাড়নজাত
শিসু
মহাপ্রাণ
অল্পপ্রাণ
বড়দাদা>বড়দা
কিছু-ুকছু
পিশাচ>বিচাস
মুক্তা>মুকুতা
ধ্বনিবিপর্যয়
ব্যঞ্জনদ্বিত্বতা
বিষমীভবন
ব্যঞ্জনবিকৃতি
মুক্তাক্ষর
কদ্ধাক্ষর
স্বরতন্ত্রী
দীর্ঘস্বর
স্বরসংগতি
বিষমীভবন
অসমীকরণ
সমীভবন
নিক্বণ
মর্মর
ঝংকার
শিঞ্জন
সংযোজক অব্যয়
বিয়োজক অব্যয়
বিস্ময়সূচক অব্যয়
পদের মধ্যে বিসর্গ থাকলে
অন্ত্য স্বরাগম
অভিশ্রুতি
ধ্বনি বিপর্যয়
মধ্য স্বরাগম
জিভের ডগা দাঁতকে স্পর্শ করে
জিভের ডগা দন্তমূলকে স্পর্শ করে
জিভের ডগা তালুকে স্পর্শ করে
জিভের ডগা উপরের পাটি দাঁতকে স্পর্শ করে
ব্যঞ্জনাগম
ধ্বনিবিপর্যয়
ধ্বনিলোপ
বিষমীভবন
চির-চীর
কাদা -কাঁদা
আপন - আপণ
বিশ -বিষ
অল্পপ্রাণ ধ্বনি
মহাপ্রাণ ধ্বনি
ঘােষধ্বনি
অঘােষ ধ্বনি
আ + ক + আ +শ + ই
আ + ক + আ+ ই + শ
আ + কা + শি
আ + কা + শ + ই
প + আ + র্ + থ +ই + ব + ও
প + আ + র্ + ই + থ + ব্ + ও
প্ + আ+ র+ ই+ থ +ও + ব
পা+ র্ + থ + ই+ ব্ + ও
ওষ্ঠ্য-অঘোষ-নাসিক্য
ওষ্ঠ্য-ঘোষ-মহাপ্রাণ
ওষ্ঠ্য-ঘোষ-নাসিক্য
ওষ্ঠ্য-ঘোষ-অল্পপ্রাণ
অল্প প্রাণ, অঘোষ
অঘোষ মহাপ্রাণ
ঘোষ, মহাপ্রাণ
নাসিকা
সম্মুখ ওষ্ঠাধর প্রসৃত হয়
কেন্দ্রীয় ওষ্ঠাধর বিবৃত হয়
পশ্চাৎ ওষ্ঠাধর গোলাকৃতি হয়
কেন্দ্রীয় ওষ্ঠাধর সংবৃত হয়
স্বরসংগতি
সমীভবন
ব্যঞ্জন বিপর্যয়
অন্ত্যস্বরাগম
বড়দিদি > বড়দি
লাফ > ফাল
শরীর > শরীল
আজি > আইজ
সমাক্ষর লোপ
সমীকরন
ব্যঞ্জনচ্যুতি
ধ্বনিবিপর্যয়
সৃংস্কৃত বৈয়াকরণদের
পাশ্চাতা ধ্বনি-বিঙ্গানীদের
এদেশের ভাষাতাতত্ত্বিকদের
তরুন ভাষা-গবেষকদের
শিস ধ্বনি
তাড়নাজাত ধ্বনি
অঘোষ ধ্বনি
তরল ধ্বনি
সম্মুখ স্বরধ্বনির
সংবৃত
উচ্চ
গোলাকৃতি
অঘোষ ধ্বনি
ঘােষ ধ্বনি
অল্পপ্রাণ ধ্বনি
মহাপ্রাণ ধ্বনি
সম্মুখ স্বরধ্বনি
সংবৃত
উচ্চ
গোলাকৃতি
পশ্চৎ স্বরধ্বনি
অর্ধসংবৃত
নিম্ন
গোলাকৃতি
পশ্চাৎ স্বরধ্বনি
অর্ধবিবৃত
নিম্ন
অগোলাকৃতি
সম্মুখ স্বরধ্বনি
বিবৃত
নিম্নমধ্য
অগোলাকৃতি
ক, গ, ঙ, ঘ, খ
ক, খ, চ, গ, ছ
ক, চ, ট, ত, প
ঙ, ঞ, ন, ণ, ম
ব্যঞ্জনবিকৃতি
প্রগত সমীভন
অন্তর্হতি
সমাক্ষরলোপ
উপসর্গ ও অনুসর্গ
পদ ও ধাতু
প্রত্যয় ও বিভক্ত
ণত্ব ও ষত্ব বিধান
আজি>আইজ
পিশাচ>পিচাশ
পাকা>পাক্কা
স্কুল>ইস্কুল
চ, ঞ, ত, ঝ, ছ
চ, থ, ত,ছ, ঞ
ঝ, ছ,চ,ত,ন
ঞ,চ,ছ, ঝ,জ
ক, চ,ট ত,প
ক, গ, ঙ, ঘ, খ
ক, ঙ,চ, গ, ছ
ঙ, ঞ, ন, ণ, ম
উলু ধ্বনি
সন্ধ্যা ধ্বনি
অলোকা
অলোলিকা
ক, খ, গ, ঘ, ঙ
চ, ছ, জ, ঝ, ঞ
ত , থ দ,ধ , ন
প, ফ, ব, ভ, ম
পরাগত সমীভবন
ধ্বনি বিপর্যয়
সম্প্রকর্ষ
বিষমীভবন
অভিশ্রুতি
স্বরভক্তি
স্বরসঙ্গতি
অপিনিহিত
অভিশ্রুতি
সমীভবন
সম্প্রকর্ষ
ব্যঞ্জনচ্যুতি
বিষমীভবন
তালব্য স্বরধ্বনি
পশ্চাৎ স্বরধ্বনি
বিবৃত স্বরধ্বনি
সম্মুখ স্বরধ্বনি
অভিশ্রুতি
বিষমীভবন
সমীভবন
ধ্বনি বিপর্যয়
মুখগহ্বরের পেশির কারণে
ধ্বন্নির বৈশিষ্টের কারণে
ফুসপুসতাডিতে বাতাসের কারণে
কোনটিই নয়
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
ও দাদা দাদা বলে কাঁদছে
বাতি জ্বলে মিটির মিটির
ভয়ে গা ছমছম করছে
কন্ঠ্য ধ্বনি
তালব্য ধ্বনি
ওষ্ঠ্য ধ্বনি
দন্ত্য ধ্বনি
স্বরযন্ত্র থেকে কম্পিত বাতাস তালুতে চাপ খায়
স্বরযন্ত্র থেকে কম্পিত বাতাস কোমল তালুতে চাপ খায়
স্বরযন্ত্র থেকে বাতাস নাসার ন্ধ্রে চাপ খায়
স্বরযন্ত্র থেকে কম্পিত বাতাস দন্তমূলে চাপ খায়
এ বয়স কাঁপে বেদনায় থরোথর
এ বয়স তবু নতুন কিছু তো করে
এ বয়স বাঁচে দুযোগে আর ঝড়ে
কোন টি নয়
যৌগিক
তালব্য
মিলিত
কোনটি নয়
স্বরযস্ত্র থেকে কম্পিত বাতাস তালুতে চাপ খায় |
স্বরযস্ত্র থেকে কম্পিত বাতাস কোমল তালুতে চাপ খায়
স্বরযন্ত্র থেকে কম্পিত বাতাস নাসারন্ধে চাপ খায় |
স্বরযন্ত্র থেকে কম্পিত বাতাস দস্ত মুলে চাপ খায়
বর্ণ
বর্গ
ধ্বনিতত্ত
কোনটিই নয়
দন্তৌষ্ঠ্য
মূর্ধন্য
তালব্য
ওষ্ঠ্য
পিশাচ>পিচাশ
বাক্স>বাস্ক
রিক্সা>রিস্কা
স্কুল>ইস্কুল
তরল
উষ্ম
কম্পনজাত
তাড়নজাত
দন্ত্য
দন্ত্যৌষ্ঠ্য
দন্তমূলীয়
ওষ্ঠ্য
ক,খ,গ,ঘ,ঙ
চ,ছ,জ,ঝ,ঞ
ট,ঠ,ড,ঢ,ণ
ত,থ,দ,ধ,ন
স্বরসঙ্গতি
যৌগিক স্বর
যুগ্মব্যঞ্জন
মধ্যস্বর
পরাগত সমীভবন
প্রগত সমীভবন
বিষমীভবন
অন্যোন্য সমীভবন
স্বরভক্তি
বিপ্রকর্ষ
অপিনিহিতি
অভিশ্রুতি
অঙ্গনা
স্মার্ত
জীমূতমন্দ্ৰ
বুক্কন
নাসিক্য ধ্বনি
কম্পনজাত ধ্বনি
তাড়নজাত ধ্বনি
উম্ম ধ্বনি
ঠা ঠা রোদ
গরম গরম জিলাপি
জ্বর জ্বর লাগছে
ভয়ে ভয়ে ছিলাম
অপিনিহিতি
বিপ্রকর্ষ
সম্প্রকর্ষ
আসমীকরণ
অঘোষ ধ্বনি
অল্পপ্রাণ ধ্বনি
মহাপ্রাণ ধ্বনি
অঘোষ ধ্বনি
অঘোষ ধ্বনি
অল্পপ্রাণ ধ্বনি
মহাপ্রাণ ধ্বনি
অঘোষ ধ্বনি
উপসর্গ
অনুসর্গ
অক্ষর
ধ্বনি
বচন

স্বরধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি (Vowel sound) । স্বরবর্ণ : অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ ও ঔ(১১টি)

হ্রস্ব স্বরধ্বনি

 হৃস্ব স্বরধ্বনি:

যে স্বরকে উচ্চারণ করতে কম সময় ও কম শ্বাসবায়ু লাগে, তাকে হ্রস্বস্বর বলে।

 হৃস্বস্বর কোনগুলি?

 অ, ই,উ,ঋ - বাংলা বর্ণমালার এই চারটি স্বর হ্রস্বস্বর।

Content added || updated By

দীর্ঘ স্বরধ্বনি

দীর্ঘ স্বরধ্বনি: 

 যে স্বরকে উচ্চারণ করতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ও বেশি শ্বাসবায়ু লাগে তাকে দীর্ঘস্বর বলে।

 দীর্ঘস্বর কোনগুলি?

 বাংলা বর্ণমালার আ, ঈ,ঊ, এ, ও – এইগুলি দীর্ঘস্বর।

সুতরাং বোঝা গেল বাংলা বর্ণমালায় যে ১১টি স্বর আছে, তার মধ্যে ৫টি দীর্ঘস্বর, ৪টি হ্রস্বস্বর ও ২টি যৌগিক স্বর। তবে মনে রাখতে হবে, বাংলা ভাষায় দীর্ঘ স্বরের প্রকৃত উচ্চারণ হয় না, সব স্বরই সাধারণ উচ্চারণে হ্রস্বস্বর হিসেবেই উচ্চারিত হয়।

Content added || updated By

মৌলিক স্বরধ্বনি

মৌলিক স্বরধ্বনি :

একটিমাত্র মূল স্বরধ্বনিকে মৌলিক স্বরধ্বনি বলে। মৌলিক স্বরধ্বনি মোট সাতটি। যেমন : অ, আ, ই, উ, এ, এ্যা, ও। এগুলোকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাগ করা যায় না। বাংলা ভাষায় ‘এ্যা’ ধ্বনিটি থাকলেও তার জন্য কোনো বর্ণ নেই।

Content added By

যৌগিক স্বরধ্বনি

যৌগিক স্বরধ্বনি : 

যদি পাশাপাশি দুটি স্বরধ্বনি দ্রুত উচ্চারণের ফলে একটি যুক্তধ্বনিতে রূপ নেয়, তবে তাকে যৌগিক স্বরধ্বনি বলে। যেমন : অ + ই = ঐ, অ + উ = ঔ। এসব ধ্বনিকে দ্বিস্বর, সন্ধিস্বর বা যৌগিক স্বরও বলা হয়। বাংলা বর্ণমালায় শুধু ঐ এবং ঔ-এ দুটি যৌগিক বর্ণকে মৌলিক বর্ণের মতো স্থান দেওয়া হয়েছে। বাংলা ভাষায় যৌগিক স্বরধ্বনির সংখ্যা ২৫টি। অ + ই = অই (বই)

অ + য় = অয় (হয়, সয়)

আ + ই = আই (খাই, নাই, ভাই)

আ + এ = আয় (গায়, যায়)

Content added By

সম্মুখস্থ বা প্রসারিত স্বরধ্বনি

সম্মুখ : 

এক্ষেত্রে জিহ্বার সামনের দিকটা তালুর দিকে উত্থিত হবে। এই জাতীয় মৌলিক স্বরবর্ণগুলো হলো- ই, এ এবং এ্যা ।

Content added By

পশ্চাৎ ভাগস্থ স্বরধ্বনি

পশ্চাৎভাগস্থ স্বরধ্বনি কাকে বলে :-

 যে সব স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা পিছনের দিকে পিছিয়ে যায়, তাকে পশ্চাৎ ভাগস্থ স্বরধ্বনি বলে। যেমন- উ, ও, অ৷

Content added || updated By

কুঞ্চিত স্বরধ্বনি

কুঞ্চিত স্বরধ্বনি কাকে বলে :-

 যে সব স্বর ধ্বনিগুলো উচ্চারণের সময় ঠোঁট দুটি গোলাকার কুঞ্চিত হয়, তাকে কুঞ্চিত স্বরধ্বনি বলা হয়। যেমন- অ, উ, ও।

Content added || updated By

সংবৃত স্বরধ্বনি

সংবৃত (Close) :

 জিহ্বা তালুর কাছাকাছি এনে বায়ু চলাচলের জন্য একটি সঙ্কীর্ণ পথ তৈরি করা হয়। এই অবস্থায় উচ্চারিত ধ্বনিগুলোকে সংবৃত বলা হয়। তালু সংলগ্ন ধ্বনি হিসাবে এদেরকে তালব্য বর্ণ বলা হয়। এক্ষেত্রে ঠোঁট প্রসারিত থাকে। পাশের চিত্রে সংবৃত উচ্চারণে জিহ্বার অবস্থান দেখানো হলো। লক্ষ্য করুন, এখানে ই ধ্বনিটির জন্য জিহ্বার সম্মুখভাগ প্রায় তালু সংলগ্ন হয়েছে এবং উ ধ্বনিটির জন্য জিহ্বার পশ্চাত্ভাগ প্রায় পশ্চাৎ তালুর সংলগ্ন হয়েছে।

Content added || updated By

বিকৃত স্বরধ্বনি

বিবৃত (Open) :

এই জাতীয় ধ্বনি উচ্চারণে জিহ্বা ও তালুর ভিতর সব চেয়ে বেশি ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়। মুখ প্রসারিত করে এই ফাঁকা জায়গার পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। বাংলাতে এই জাতীয় স্বরবর্ণটি হলো আ। এক্ষেত্রে জিহ্বা স্বাভাবিকভাবে নিম্ন চোয়াল বরাবর শায়িত থাকবে। দীর্ঘ বা হ্রস্ব আ হিসাবে এর কোন পরিবর্তন ঘটবে না। আরবি ভাষার গলকক্ষ থেকে উচ্চারিত আ ধ্বনিটির ক্ষেত্রেও একই রীতি অনুসৃত হবে। কখনো কখনো জিহ্বার পশ্চাৎ অংশ ভিতরের দিকে সংকুচিত করে আ ধ্বনিটি উচ্চারণ করা হয়। এই ধ্বনিটিও বাংলাতে নেই। পাশের চিত্রে বিবৃত অবস্থায় আ ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার অবস্থান দেখানো হল।

Content added || updated By

কণ্ঠ্যধ্বনি কি :-

 যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান কণ্ঠনালির উপরিভাগ বা জিহ্বামূল, তাদের কণ্ঠ্যধ্বনি বলে। যেমন- অ আ।

Content added || updated By

তালব্যধ্বনি কি :-

 যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান তালু, তাদের তালব্য ধ্বনি বলে। যেমন- ই, ঈ, তালব্যধ্বনি।

Content added || updated By

ওষ্ঠ্যধ্বনি:-

 যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান ওষ্ঠ, তাদের ওষ্ঠ্যধ্বনি বলে। যেমন:-

 উ, ঊ,

Content added || updated By

কণ্ঠ্যতালব্যধ্বনি

কণ্ঠ্যতালব্যধ্বনি :-

যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান কণ্ঠ এবং তালু উভয়ই, তাদের কণ্ঠ্যতালব্য ধ্বনি বলে। যেমন- এ ঐ কণ্ঠ্যতালব্য ধ্বনি।

Content added || updated By

কণ্ঠৌষ্ঠ্যধ্বনি

কণ্ঠৌষ্ঠ্যধ্বনি :-

যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান কণ্ঠ ও ওষ্ঠ, তাদের কণ্ঠৌষ্ঠ্য ধ্বনি বলে। যেমন- ও, ঔ কণ্ঠৌষ্ঠ্য ধ্বনি।

Content added || updated By

মূর্ধন্য ধ্বনি :-

যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান মূর্ধা বা তালুর অর্থভাগ, তাদের মূর্ধন্য ধ্বনি বলে। যেমন- ঋ

Content added || updated By

ব্যঞ্জনধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonant sound) যেমন- ক, চ, ট, ত, প ইত্যাদি ।

স্পর্শ ধ্বনি বা স্পর্শ বর্ণ

ক থেকে ম পর্যন্ত পাঁচটি বর্গে মোট পঁচিশটি ধ্বনি। এসব ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার সঙ্গে অন্য বাগযন্ত্রের কোনো কোনো অংশের কিংবা ওষ্ঠের সঙ্গে অধরের স্পর্শ ঘটে; অর্থাৎ এদের উচ্চারণে বাপ্রত্যঙ্গের কোথাও না কোথাও ফুসফুসতাড়িত বাতাস বাধা পেয়ে বেরিয়ে যায়। বাধা পেয়ে স্পষ্ট হয় বলে এগুলোকে বলে স্পর্শ ধ্বনি।

ক-বর্গীয় ধ্বনি : ক খ গ ঘ ঙ এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণ জিহ্বার গোড়ার দিকে নরম তালুর পশ্চাৎ ভাগ স্পর্শ করে। এগুলো জিহ্বামূলীয় বা কণ্ঠ্য স্পর্শধ্বনি।

চ – বর্গীয় ধ্বনি

চ-বর্গীয় ধ্বনি : চ ছ জ ঝ ঞ—এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার অগ্রভাগ চ্যাপটাভাবে তালুর সম্মুখ ভাগের সঙ্গে ঘর্ষণ করে। এদের বলা হয় তালব্য স্পর্শধ্বনি।

ট – বর্গীয় ধ্বনি

ট-বর্গীয় ধ্বনি : ট ঠ ড ঢ ণ - এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার অগ্রভাগ কিঞ্চিৎ উল্টিয়ে ওপরের মাড়ির গোড়ার শক্ত অংশকে স্পর্শ করে। এগুলোর উচ্চারণে জিহ্বা উল্টা হয় বলে এদের নাম দন্তমূলীয় প্রতিবেষ্টিত ধ্বনি। আবার এগুলো ওপরের মাড়ির গোড়ার শক্ত অংশ অর্থাৎ মূর্ধায় স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় বলে এদের বলা হয় মূর্ধন্য ধ্বনি।

ত-বর্গীয় ধ্বনি : ত থ দ ধ ন— এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বা সম্মুখে প্রসারিত হয় এবং অগ্রভাগ ওপরের দাঁতের পাটির গোড়ার দিকে স্পর্শ করে। এদের বলা হয় দন্ত্য ধ্বনি ।

প-বর্গীয় ধ্বনি : প ফ ব ভ ম – এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে ওষ্ঠের সঙ্গে অধরের স্পর্শ ঘটে। এদের ওষ্ঠ্যধ্বনি বলে।

অঘোষ ধ্বনি : কোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় না। তখন ধ্বনিটির উচ্চারণ গাম্ভীর্যহীন ও মৃদু হয়। এরূপ ধ্বনিকে বলা হয় অঘোষ ধ্বনি (Unvoiced)। যেমন— ক, খ ইত্যাদি। ঘোষ ধ্বনি ইত্যাদি। 

ঘোষ: ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হলে ঘোষ ধ্বনি (Voiced) হয়। যেমন— গ, ঘ

অল্পপ্রাণ ধ্বনি

অল্পপ্রাণ ধ্বনি : কোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয় না। এরূপ ধ্বনিকে বলা হয় অল্পপ্রাণ ধ্বনি (Unaspirated)। যেমন—ক, গ ইত্যাদি ।

মহাপ্রাণ ধ্বনি : কোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয়। এরূপ ধ্বনিকে বলা হয় মহাপ্রাণ ধ্বনি (Aspirated)। যেমন— খ, ঘ ইত্যাদি।

আনুনাসিক বা নাসিক্য বর্ণ

ঙ ঞ ণ ন ম – এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে নাক ও মুখ দিয়ে কিংবা কেবল নাক দিয়ে ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বের হয় বলে এদের বলা হয় নাসিক্য ধ্বনি এবং প্রতীকী বর্ণগুলোকে বলা হয় নাসিক্য বর্ণ ।

উষ্ম ধ্বনি বা উষ্ম বর্ণ

উষ্মধ্বনি : যে ব্যঞ্জনের উচ্চারণে বাতাস মুখবিবরে কোথাও বাধা না পেয়ে কেবল ঘর্ষণপ্রাপ্ত হয় এবং শিশধ্বনির সৃষ্টি করে, সেটি উষ্মধ্বনি। যেমন— আশীষ, শিশি, শিশু ইত্যাদি। শিশ দেয়ার সঙ্গে এর সাদৃশ্য রয়েছে বলে একে শিশধ্বনিও বলা হয়।
শ, ষ, স – তিনটি উষ্ম বর্ণ। শ-বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান পশ্চাৎ দন্তমূল। ষ-বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির - উচ্চারণ স্থান মূর্ধা এবং স-বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান দত্ত।

অন্তঃস্থ ধ্বনি বা অন্তঃস্থ বর্ণ

অন্তঃস্থ ধ্বনি : স্পর্শ বা উষ্ম ধ্বনির অন্তরে অর্থাৎ মাঝে আছে বলে য র ল ব-এ ধ্বনিগুলোকে অন্তঃস্থ ধ্বনি বলা হয় আর বর্ণগুলোকে বলা হয় অন্তঃস্থ বর্ণ।
য : য-বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি সাধারণত সম্মুখ তালু স্পর্শ করে উচ্চারিত হয়। এজন্য এ ধ্বনিটিকে বলা হয় তালব্য ধ্বনি। শব্দের আদিতে ব্যবহৃত হলে বাংলায় এর উচ্চারণ ‘জ'-এর মতো। যেমন - যখন, যাবেন, যুদ্ধ, যম ইত্যাদি। শব্দের মধ্যে বা অন্তে (সংস্কৃত নিয়মানুযায়ী) ব্যবহৃত হলে ‘য়’ উচ্চারিত হয়। যেমন – 1 বি + যোগ = বিয়োগ ।
র : র-বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি জিহ্বার অগ্রভাগকে কম্পিত করে এবং তদ্বারা দন্তমূলকে একাধিকবার দ্রুত আঘাত করে উচ্চারিত হয়। জিহ্বাগ্রকে কম্পিত করা হয় বলে এ ধ্বনিকে কম্পনজাত ধ্বনি বলা হয়। উদাহরণ রাহাত, আরাম, বাজার ইত্যাদি।
 : ল-বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি উচ্চারণে জিহ্বার অগ্রভাগকে মুখের মাঝামাঝি দত্তমূলে ঠেকিয়ে রেখে জিহ্বার দুই পাশ দিয়ে মুখবিবর থেকে বায়ু বের করে দেয়া হয়। দুই পাশ দিয়ে বায়ু নিঃসৃত হয় বলে একে পার্শ্বিক ধ্বনি বলা হয়। যেমন – লাল, লতা, কলরব, ফল, ফসল।
 : বাংলা বর্ণমালায় বর্গীয়-ব এবং অন্তঃস্থ-ব-এর আকৃতিতে কোনো পার্থক্য নেই। আগে বর্গীয় ও অন্তঃস্থ- এ দুই রকমের ব-এর লেখার আকৃতিও পৃথক ছিল, উচ্চারণও আলাদা ছিল। এখন আকৃতি ও উচ্চারণ অভিন বলে অন্তঃস্থ-ব কে বর্ণমালা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। প্রকৃত প্রস্তাবে অন্তস্থ ‘য’ ও অন্তঃস্থ ‘ব’- এ দুটো অবস্বর (Semivowel)। প্রথমটি অয় বা ইয় (y) এবং দ্বিতীয়টি অব বা অও (w)-র মতো। যেমন নেওয়া, হওয়া ইত্যাদি ।

তালব্যধ্বনি :-

যেসব ধ্বনির উচ্চারণস্থান তালু, তাদের তালব্যধ্বনি বলে। চ, ছ, জ, ঝ, ঞ, য়, শ ভালব্যধ্বনি।

Content added || updated By

তাড়নজাত বা তাড়িত ধ্বনি

তাড়নজাত ব্যঞ্জন ধ্বনি –  

ড় এবং ঢ় কে তাড়নজাত ব্যঞ্জন ধ্বনি বলে। কারণ ধ্বনি দুটি উচ্চারণকালে জিডের অগ্রভাগ উলটে দিয়ে দন্তমূলে আঘাত করে। তাই এদের বলা হয় তাড়নজাত বঞ্জন ধ্বনি।

Content added || updated By

পার্শ্বিক ব্যঞ্জন ধ্বনি – 

ল' কে পার্শ্বিক ব্যঞ্জন ধ্বনি বলে।

Content added || updated By

কম্পনজাত ধ্বনি – 

র, ন, ল, কে কম্পনজাত ধ্বনি বলে।

Content added || updated By

নাসিক্য ধ্বনি –

 ন, ম ধ্বনি গুলি উচ্চারণের সময় শ্বাসবায় নাসিকার ভিতর দিয়ে নির্গত হয় বলে এদের নাসিকা ধ্বনি বা অনুনাসিক ধ্বনি বলে

Content added || updated By

আরও দেখুন...

ধ্বনি স্বরধ্বনি হ্রস্ব স্বরধ্বনি দীর্ঘ স্বরধ্বনি মৌলিক স্বরধ্বনি যৌগিক স্বরধ্বনি সম্মুখস্থ বা প্রসারিত স্বরধ্বনি পশ্চাৎ ভাগস্থ স্বরধ্বনি কুঞ্চিত স্বরধ্বনি সংবৃত স্বরধ্বনি বিকৃত স্বরধ্বনি কণ্ঠ্যধ্বনি তালব্যধ্বনি ওষ্ঠ্যধ্বনি কণ্ঠ্যতালব্যধ্বনি কণ্ঠৌষ্ঠ্যধ্বনি মূর্ধন্যধ্বনি ব্যঞ্জনধ্বনি স্পর্শ ধ্বনি বা স্পর্শ বর্ণ ক – বর্গীয় ধ্বনি চ – বর্গীয় ধ্বনি ট – বর্গীয় ধ্বনি ত – বর্গীয় ধ্বনি প – বর্গীয় ধ্বনি অঘোষ ধ্বনি ঘোষ ধ্বনি অল্পপ্রাণ ধ্বনি মহাপ্রাণ ধ্বনি আনুনাসিক বা নাসিক্য বর্ণ উষ্ম ধ্বনি বা উষ্ম বর্ণ অন্তঃস্থ ধ্বনি বা অন্তঃস্থ বর্ণ তালব্য ধ্বনি তাড়নজাত বা তাড়িত ধ্বনি পাশ্বিক ধ্বনি কম্পনজাত ধ্বনি অনুনাসিক ধ্বনি
Promotion